Wednesday, August 29, 2018

ওরা না থাকলে আমি কিছুই না: জেমস

অনেক বছর অডিও জগতে জেমসের নতুন কোনো গান নেই। অডিওতে পাওয়া না গেলেও চলচ্চিত্রের গানে হঠাৎ
হঠাৎ উঁকি দিতে দেখা যায় তাঁকে। গত কয়েক বছরে চলচ্চিত্রে যে কয়টা গান গেয়েছেন, সব কটিই সুপার হিট তকমা পেয়েছে। সর্বশেষ ‘সত্তা’ ছবির ‘তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম’ গানটিও সবার মুখে মুখে। তবে স্টেজ শো নিয়ে তিনি ভীষণ ব্যস্ত। এখনো কনসার্টে মাতিয়ে রাখেন দর্শক-শ্রোতাদের। নতুন গান আর গানের জগতের পরিবর্তন নিয়ে সম্প্রতি প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন জেমস।
অনেক দিন আপনার নতুন কোনো গান নেই।

নতুন গান আবার কী! এক জীবনে যা গান গেয়েছি, এগুলো তো শুনে শেষ হবে না। তা ছাড়া এখন মন চাইছে না নতুন গান করি। আবার যদি মন বলে গান গাওয়ার জন্য, তখন অবশ্যই করব।

আপনাকে দিয়ে অনেক সুরকার ও সংগীত পরিচালক সিনেমার গান গাওয়াতে চান। কিন্তু আপনাকে নাকি পাওয়া যায় না।
আমার কাছে ১০টা গান পড়ে আছে। কোনোটারই কথা, সুর আর সংগীতায়োজন পছন্দ হচ্ছে না। পছন্দ হলে অবশ্যই গান করব। গত কয়েক বছরে তো সিনেমায় কয়েকটা গান গেয়েছি।

আপনি বাংলাদেশের গানের জগতের অনেক পরিবর্তন দেখেছেন। শুরুতে ক্যাসেট চলত, এরপর সিডি, এফএম রেডিও, এখন মানুষ ইউটিউবে গান শোনে। এই পরিবর্তনগুলাকে কীভাবে দেখেন?
পরিবর্তনকে আমি ইতিবাচকভাবে দেখছি। আগে একটা গান শ্রোতার কাছে পৌঁছাতে অনেক সময় লাগত, এখন দ্রুত তা সবার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। তা ছাড়া এখন শিল্পীকে গান প্রকাশের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হচ্ছে না। ছেলে-পেলেরা একটা গান বানিয়ে, ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবে ছেড়ে দিচ্ছে। স্বাধীন একটা মাধ্যম, কোনো মধ্যস্বত্বভোগীর দৌরাত্ম্য নেই। কারও সহযোগিতা ছাড়াই একজন শিল্পী গান নিয়ে তাঁর কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছে যেতে পারছেন। আর কোনোভাবে একজন শিল্পীর একটা গান যদি হিট হয়ে যায়, তাহলে তো কথাই নেই। কারও দয়ায় বাঁচতে হচ্ছে না।

জেমস। ছবি: কবির হোসেন

অনেক শিল্পী অভিযোগ করেন, পাইরেসির কারণে এখন আর সিডি চলে না।
না চলুক। সিডি চলতে হবে কেন? সিডি ছাড়াই তো এখন কত প্রতিভাবান শিল্পী আসছে, তাদের গান শ্রোতারা শুনছেন। সিডির বিকল্প হিসেবে তারা ইউটিউবকে বেছে নিয়েছে। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে এভাবে মানুষ তার প্রয়োজনের ব্যাপারটি খুঁজে নেয়। অনেক শিল্পী হিট হচ্ছে। এরা তো কোনো সিডি ব্যবসায়ীর মাধ্যমে হয়নি। ইন্টারনেটের যুগ, তাই এটা সম্ভব হয়েছে।

বাংলাদেশের গানের জগতে প্রথমে ‘গুরু’ হিসেবে পরিচিতি পান আজম খান। তারপর আপনি। যখন স্টেজে ওঠেন, তরুণ-তরুণীরা দর্শক সারি থেকে ‘গুরু’ বলে চিৎকার করে। তখন কেমন লাগে?
তাদের ‘গুরু’ বলে চিৎকার আমাকে উৎসাহ আর অনুপ্রেরণা দেয়। অসীম শক্তি জোগায়। মানুষের ভালোবাসার তীব্রতা টের পাই। আসলে শ্রোতারা থাকলেই তো আমি। ওরা না থাকলে আমি কিছুই না।

মানুষের নানা লক্ষ্য থাকে। আপনার?
না না না। আমি প্রতিটা দিন উপভোগ করি। আমি আমার মতো করে কাজ করে যাই। আমার আগ্রহ না থাকলে সে কাজ করি না। তাই সেভাবে লক্ষ্য থাকার তো কথাই না।

জেমস। ছবি: কবির হোসেন

গানের জগতে অনেক বছরের পথচলা। পেছন ফিরে তাকালে কেমন লাগে?
দারুণ অনুভূতি হয়। এক জীবনে অগণিত মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। মানুষের ভালোবাসা পেতে কার না ভালো লাগে। এ এক স্বর্গীয় অনুভূতি। তবে এটাও ঠিক, পথটা মোটেও মসৃণ ছিল না। অনেক ওঠানামা ছিল। কিন্তু কখনোই হাল ছাড়িনি। গান করছি এটাই আমার আনন্দ, এটাই ছিল আমার ভালো লাগা-ভালোবাসা। তারপর কী হয়েছে, না হয়েছে এটা নিয়ে ভাবিনি। কিছু না হলেও গানই গাইতাম।

বলছিলেন নতুন অনেকে ভালো করছে। নতুনদের গান শোনা হয়?
পত্রিকা আর নানা মাধ্যম থেকে জানতে পারি, গানের জগতে নতুন অনেকে ভালো করছে। নিজেদের চেষ্টায় তারা এগিয়ে যাচ্ছে। তবে নতুনদের গান শোনার সময়টা হয়ে ওঠে না। এখন সবদিকে পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে, গানের জগৎ এর বাইরে নয়।

ঈদ উপলক্ষে কী কেনাকাটা করেছেন?
আমি কেনাকাটা করি না। ভক্তরাই আমার কেনাকাটার কাজ করে ফেলে। আর দেশের বাইরে যখন যাই, তখন শপিংমলে ঢুঁ মারি। আরামদায়ক যেকোনো পোশাক আমার পছন্দ।

No comments:

Post a Comment