Thursday, June 20, 2019

৩৮২ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করছে বাংলাদেশ

ম্যাচের শুরুতেই অস্ট্রেলিয়াকে চাপে ফেলে দেওয়ার মোমেন্টাম পেয়ে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু ডেভিড ওয়ার্নারের ক্যাচ ফেলে দিয়ে সাব্বির রহমান সুযোগটা হাতছাড়া করেন। বাংলাদেশ দলকে আর ম্যাচে ফেরার সুযোগই দেয়নি অজিরা। বল টেম্পারিংয়ের জন্য দুয়ো শোনা ওয়ার্নার 'স্টান্ডিং অভেয়েশন' পাওয়ার মতো এক সেঞ্চুরি করেছেন। উসমান খাজা দারুণ ব্যাটিং করেছেন। অ্যারন ফিঞ্চ শুরুতে পথ তৈরি করে দিয়ে গেছেন। অস্ট্রেলিয়া নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ৩৮১ রান।

নিজেদের ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি বাংলাদেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ রান দেওয়ার রেকর্ড। এর আগে ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই নটিংহামে ৩৯১ রান তোলে ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপে। ওই ম্যাচে বাংলাদেশ খায় ৩৮৬ রান। পাকিস্তানের বিপক্ষে ডাম্বুলায় ২০১০ সালে ৩৮৫ রান দেয় বাংলাদেশ। এবার দিল ৩৮১ রান। এর আগে ভারতের বিপক্ষে ২০১১ বিশ্বকাপে ৩৭০ রান খান সাকিবরা।

ঝলমলে রোদ দিয়ে শুরু হয় ট্রেন্ট ব্রিজের সকাল। টস জিতে তাই ব্যাটিং নেয় অস্ট্রেলিয়া। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের দুই ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ এবং ডেভিড ওয়ার্নার শুরুতে ১২১ জুটি গড়েন। বোলিংয়ে এসে ফিঞ্চকে ৫৩ রানে বিদায় করে সেই জুটি ভাঙেন সৌম্য সরকার। এরপর উসমান খাজা এবং ওয়ার্নার আবার জুটি গড়েন। তাদের জুটি থেকে আসে ১৯২ রান।

বাংলাদেশ বোলারদের কচুকাটা করে ডেভিড ওয়ার্নার ১৬৬ রান করেন। সৌম্যর বলে ক্যাচ দেওয়ার আগে চৌদ্দটি চার এবং পাঁচটি ছক্কা তোলেন তিনি। পরে সেঞ্চুরির পথে থাকা উসমান খাজাও সৌম্য বলে ৮৯ রান করে আউট হন। একই ওভারে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ফেরেন ১০ বলে ৩২ রানের এক ঝড় দেখিয়ে।

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে শুরুর চার ব্যাটসম্যানই ভালো খেলেন। অজিরা এ ম্যাচে সাকিবকে যাতে কম খেলতে হয় সেই বুদ্ধি করে ব্যাটিং অর্ডার সাজায়। ফিঞ্চ আউট হওয়ার পরে ডান হাতি-বাঁ হাতি কম্বিশনে না গিয়ে স্মিথের বদলে উসমান খাজাকে ব্যাটে পাঠায় তারা। বাঁ-হাতি আর্ম বোলার সাকিব তাই দুই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে সুবিধা করতে পারেননি। মিরাজকে এক প্রান্ত দিয়ে বোলিং করানো হলেও সুবিধা করতে পারেননি তিনিও। মিরাজ এ ম্যাচে ১০ ওভারে দেন ৫৯ রান। সাকিবের ৬ ওভার থেকে ৫০ রান আসে।

ওদিকে পেস বোলাররাও ছিলেন ছন্নছাড়া। সৌম্য সরকারকে তাই আট ওভার বোলিং করতে হয়েছে। দলের হয়ে তিন উইকেট নেন তিনি ৫৮ রান খরচায়। সেই তুলনায় মুস্তাফিজ-রুবেলরা বেশ খরুচে। সাইফউদ্দিনের বদলে দলে আসা রুবেল হোসেন এ ম্যাচে ৯ ওভারে ৮৩ রান খরচা করেন। কোন উইকেট পাননি তিনি। মুস্তাফিজ দেন ৯ ওভারে ৬৯ রান। নেন একটি উইকেট। এছাড়া অধিনায়ক মাশরাফি ৮ ওভারে ৫৬ রান খরচা করেন।

শনিবার খাওয়ানো হবে ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল

সারাদেশে ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী দুই কোটি ২০ লাখ শিশুকে বিনামূল্যে ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে আগামী শনিবার।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, এবার দেশের দুই কোটি ২০ লাখ শিশুকে ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ক্যাম্পেইনের দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সব টিকাদান কেন্দ্র খোলা থাকবে। ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন পর্যবেক্ষণ বা মনিটরিং করার জন্য এদিন সব উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোলরুম খোলা থাকবে। জাতীয় ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন চলাকালে যাতে কোনো কুচক্রী মহল নেতিবাচক প্রচারের মাধ্যমে কার্যক্রম ব্যাহত করতে না পারে সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, এবার ভিটামিন-এ ক্যাপসুলের মানের বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাবেন না। একাধিকবার ল্যাব টেস্ট করা হয়েছে। আশা করি কোনো সমস্যা হবে না। তিনি আরও বলেন, জোর করে বা কান্নারত অবস্থায় বা এরই মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে এমন শিশুকে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না। ছয় মাসের কম এবং পাঁচ বছরের বেশি বয়সী এবং অসুস্থ শিশুকে ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না।

জাহিদ মালেক বলেন, দেশব্যাপী এক লাখ ২০ হাজার স্থায়ী কেন্দ্রসহ অতিরিক্ত ২০ হাজার ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রের মাধ্যমে ক্যাম্পেইনের কার্যক্রম চালানো হবে। ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রগুলো বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট, ব্রিজের টোল প্লাজা, বিমানবন্দর, রেলস্টেশন ও খেয়াঘাটে অবস্থান করবে। দুর্গম এলাকায় ক্যাম্পেইন সফল করার জন্য পরবর্তী চারদিন বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে ঢাকা জেলায় ১০ লাখ ২০ হাজার শিশুকে ভিটামিন 'এ' প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে বলে জানিয়েছে সিভিল সার্জন কার্যালয়। বৃহস্পতিবার প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) কার্যালয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের অবহিতকরণ সভায় জনস্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শক ডা. ফজলুল কবির রুমি এ তথ্য জানান।

ঢাকায় ২২শ' স্থায়ী ও অস্থায়ী কেন্দ্রে শিশুদের ভিটমিন 'এ' ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। ক্যাম্পেইনে পাঁচ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবেন বলে আশা করেন ।

ওপেনিং ব্যাটসম্যান যখন দলের সেরা বোলার



ক্রিকেট মাঝে মাঝে বিস্ময়কর ঘটনার জন্ম দেয়। যেমনটা হয়েছে আজ বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে। এদিন বল হাতে যিনি বাংলাদেশের সেরা বোলিং করেছেন তিনি কোনো স্পেশালিস্ট বোলার নন; বরং তিনি প্রতিষ্ঠিত ওপেনিং ব্যাটসম্যান। প্রতিপক্ষ বোলারদের বেদম প্রহার করতে যার জুড়ি নেই। সেই বিধ্বংসী ওপেনার সৌম্য সরকারই আজ বাংলাদেশের সেরা বোলার। নিয়েছেন ৫৮ রানে ৩ উইকেট। যা তার ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং।

সৌম্য-রুবেলের জুটিটা আজ বেশ জমে গিয়েছিল। তবে দুজনের ভূমিকা ছিল ভিন্ন। বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত সৌম্য আজ বোলার বনে যান। আর চলতি বিশ্বকাপে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া স্বীকৃত পেসার রুবেল হোসেন বনে যান ফিল্ডার। এই সৌম্য-রুবেল জুটিতেই ৩ উইকেট খোয়া গেছে অজিদের। অধিনায়ক অ্যরন ফিঞ্চকে (৫৩) রুবেল হোসেনের তালুবন্দি করে সৌম্য তার উইকেট শিকার অভিযান শুরু করেন।

সৌম্যর দ্বিতীয় শিকার ১৪৭ বলে ১৬৬ রানের ইনিংস খেলা অপর ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। শর্ট থার্ডম্যানে ক্যাচ নেন সেই রুবেল হোসেন। উইকেটে এসেই ধ্বংসলীলা শুরু করেছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ১০ বলে ৩২ রানে তাকে থামান সেই সৌম্য-রুবেল জুটি। সৌম্যর বলে সরাসরি থ্রোতে ম্যাক্সওয়েলের স্টাম্প ভাঙেন রুবেল হোসেন। ৮ ওভার বল করে এই ওপেনার ৫৮ রানে শিকার করেছেন ৩ উইকেট। অজিদের অপর উইকেটটি নেন মুস্তাফিজুর রহমান।

Sunday, September 9, 2018

নিরাপদে মোটরসাইকেল চালাতে করণীয়

নগরীর ব্যস্ত সড়কে দ্রুত ও স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচলের জন্য মোটরসাইকেল একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহন। তবে মোটরসাইকেল চালাতে বেশ ঝুঁকিও রয়েছে। তাই মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় বের হওয়ার আগে আপনার নিজের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি।

মোটরসাইকেল ড্রাইভ করার সময় নিজেকে নিরাপদ রাখতে আপনার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আসুন জেনে নিই নিরাপদে মোটরসাইকেল চালাতে চালকের করণীয়-

মোটরসাইকেল পরীক্ষা করুন

মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় বের হওয়ার আগে প্রতিবার বাইকের সব কিছু ঠিকমতো কাজ করছে কিনা তা ভালোভাবে পরীক্ষা করে নেবেন। চেইন, বেল্ট, ব্রেক ও শ্যাফট- সব কিছু যথাযথ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন যে সব ঠিকমতো কাজ করছে; আর তা যদি না করে থাকেন, তবে ঘটে যেতে পারে যে কোনো বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

হেলমেট

হেলমেট আমাদের মাথাকে যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করে। তাই অবশ্যই বের হওয়ার আগে আপনার হেলমেট সঙ্গে নিন। হেলমেট না থাকায় মোটরসাইকেল দ্বারা সংঘটিত অধিকাংশ দুর্ঘটনায় মৃত্যুই হয় মাথায় আঘাত পাওয়ার কারণে।

আবহাওয়া

আবহাওয়া বিবেচনায় আনুন। খারাপ আবহাওয়া ও ভারী বৃষ্টিতে বাইক চালানো ঝুঁকিপূর্ণ। কেননা রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। এ সময় টায়ার স্কিড করতে পারে।

পোশাক

ছোট ও ঢিলেঢালা কাপড় পরা ভালো আইডিয়া নয়। কারণ এগুলো নিরাপদ নয়। এগুলো একই সঙ্গে পিছলানোর সম্ভাবনাও বাড়িয়ে দেয়। নিরাপত্তার জন্য আপনি যা করতে পারেন, তা হল- একটি ছিদ্রযুক্ত জ্যাকেট, যা একই সঙ্গে আপনাকে নিরাপদ ও ঠাণ্ডা রাখবে। গ্রীষ্মের সময় জিন্স টি-শার্ট পরা যায়।

মনোযোগ

বাইক চালানোর সময় চালকের চোখ-কান অবশ্যই খোলা রাখবেন। কারণ দুটি বাইকের চালকদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

মোবাইল ফোন ও হেডফোন

সম্পূর্ণ মনোযোগ ড্রাইভিংয়ের দিকে রাখা একটি অবশ্য পালনীয় নীতি। যে কোনো প্রকার অমনোযোগিতায় বাইকচালকের জন্য ক্ষতিকর এবং তা দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। বাইক চালানোর সময় কোনো কিছু চিন্তা করা খুবই খারাপ। এ ছাড়া মোবাইলে কথা বলা ও হেডফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

ট্রাফিক সিগন্যাল

মোটরসাইকেল চালানোর সময় দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রাফিক সিগন্যাল মেনে চলুন। ট্রাফিক সিগন্যালগুলোতে পৌঁছানোর আগে থেকে বাইকের গতি কমিয়ে ফেলুন। এতে আপনার তেল আর ব্রেক প্যাডেলের ক্ষয় হবে কম।

ওভারটেকিং

বাস, ট্রাক অথবা কার ওভারটেকিং করার সময় কিছু দূরত্ব রাখা এবং সামনের দিকে তাকানো উচিত। যদি গাড়িটিকে ওভারটেকিং করার যথেষ্ট সুযোগ থাকে তা হলে হর্ন, পাস লাইট ব্যবহার করে সামনে এগিয়ে যান।

আইন

ট্রাফিক আইন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখুন। এ ছাড়া রাস্তায় গাড়ি চালানোর বেসিক রুলসগুলো জানুন এবং মেনে চলুন।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে রাখুন

গাড়ি চালানোর সময় বাইকের নিবন্ধন সনদ, ট্যাক্স টোকেন, ফিটনেস সনদ, বীমা সনদ ও ড্রাইভিং লাইসেন্স সঙ্গে রাখুন।

[প্রিয় পাঠক, আপনিও অনলাইন বাংলাদেশি নিউজ পেপারের অংশ হয়ে উঠুন। লাইফস্টাইলবিষয়ক ফ্যাশন, স্বাস্থ্য, ভ্রমণ, নারী, ক্যারিয়ার, পরামর্শ, এখন আমি কী করব, খাবার, রূপচর্চা ও ঘরোয়া টিপস নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুন এ ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।]
saifulseo2017@gmail.com

Saturday, September 1, 2018

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ট্রেনের সঙ্গে বাসের ধাক্কায় নিহত ১, আহত ২৩

                                                                  চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ট্রেন-বাসের সংর্ঘষে ধুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া বাস।
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বাসের ২৩ যাত্রী।

গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ৩টা ৪০ মিনিটে উপজেলার বারৈয়ারহাট রেলগেটে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পরপর ওই রেলগেটের দায়িত্বে থাকা গেটম্যান আরিফ হোসেন (২৭) পালিয়ে যান। দুর্ঘটনার সময় গেট খোলা ছিল।

এই দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির নাম সুনীল চাকমা (৬০)। তাঁর বাড়ি খাগড়াছড়ির মধুপুর গ্রামে। সুনীল চাকমা খাগড়াছড়ি ডিসি অফিসের অফিস সহকারী ছিলেন।

আহত ব্যক্তিরা হলেন মো. জায়েল (২২), মংসিং প্রু মারমা (৪৭), আবাদুল করিম (২৭), লিটন চাকমা (২৪), কমিস্ট ত্রিপুরা (১৯), দীপ্তি চাকমা (৫৬), কর্ম বিকাশ চাকমা (৬০), দেশি ত্রিপুরা (২৮), বাবু ত্রিপুরা (২৩), নিরঞ্জন ত্রিপুরা (২৯), সুজন ত্রিপুরা (২৮), প্রমি ত্রিপুরা (২৪), লোশন দেওয়ান (২৩), পূজন চাকমা (৬০), মীনা চাকমা (৩৫), কুসুম বীথি (৬০) এবং পটুয়াখালীর বাসিন্দা মো. মারুফ। আহত ছয়জনের নাম জানা জায়নি। মারুফ ছাড়া অন্য সবার বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন উপজেলায়।

আজ রোববার সকাল ছয়টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজন, রেল পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল রাত ৩টা ৪০ মিনিটে ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি মিরসরাইয়ের বারৈয়ারহাট রেলগেট পার হওয়ার সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা খাগড়াছড়িগামী এস আলম পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসটিকে ধাক্কা দিলে গাড়িটি ট্রেনের সামনের অংশে আটকে গিয়ে ৪০০ মিটার দক্ষিণে নিয়ে ট্রেনটি থেমে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

জানতে চাইলে রেল পুলিশ সীতাকুণ্ড ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) নুর মোহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার তৎপরতায় যোগ দিই। পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখা হবে।’

দুর্ঘটনাস্থলের এক কিলোমিটারের মধ্যে চিনকি আস্তানা রেলস্টেশন। জানতে চাইলে সেই স্টেশনের প্রধান স্টেশন কর্মকর্তা মইনুল হুদা মজুমদার বলেন, দুর্ঘটনার সময় ওয়াহেদুর রহমান নামের আরেক স্টেশনমাস্টার কর্মরত ছিলেন। কার গাফিলতিতে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।

Thursday, August 30, 2018

এশিয়া কাপের দলে সাকিব, বাদ সাব্বির-এনামুল



অনিশ্চয়তা কেটে গেছে। সাকিব আছেন এশিয়া কাপের বাংলাদেশ দলে। আজ বিকেলে ১৫ সদস্যের যে দল দিয়েছে বিসিবি, তাতে বাদ পড়েছেন সাব্বির-এনামুল। নতুন করে সুযোগ পেয়েছেন মিঠুন ও আরিফুল।
সাকিব আল হাসানের অস্ত্রোপচার তাহলে এশিয়া কাপের আগে হচ্ছে না। এশিয়া কাপ সামনে রেখে আজ বিকেলে ১৫ সদস্যের যে দল দিয়েছে বিসিবি, তাতে দলের সহ-অধিনায়ক হিসেবেই রাখা হয়েছে সাকিবকে। এশিয়া কাপের দলে ঠাঁই মেলেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ থাকা সাব্বির রহমান, এনামুল হক ও আবু জায়েদ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে ফিরেই সাকিব জানিয়েছিলেন, এশিয়া কাপের আগে বাঁ হাতের আঙুলে অস্ত্রোপচারটা সেরে ফেলতে চান। কিন্তু বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান চান, সাকিব এশিয়া কাপটা খেলুন। সাকিবের অস্ত্রোপচার হোক অক্টোবর-নভেম্বরের জিম্বাবুয়ে সিরিজের সময়। শেষ পর্যন্ত সেটিই হচ্ছে। আজ নাজমুলের সঙ্গে কথা বলে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে রেখে নির্বাচকেরা চূড়ান্ত দল দিয়েছেন সাকিবের

থাকাটা দলকে নিশ্চয়ই আত্মবিশ্বাসীকরবে।
এশিয়া কাপের দল থেকে বাদ পড়েছেন সাব্বির-এনামুল। ছবি: প্রথম আলো
এশিয়া কাপের দল থেকে বাদ পড়েছেন সাব্বির-এনামুল। ছবি: প্রথম আলো
অন্যদিকে আত্মবিশ্বাস আর ছন্দ হারিয়ে ফেলা সাব্বির আর এনামুলকে বাদ দিতে খুব একটা ভাবতে হয়নি নির্বাচকদের। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে তিন ওয়ানডেতে সাব্বিরের রান ২৭। এমনিতে মাঠে পারফরম্যান্স, কদিন পরপর তাঁকে ঘিরে নানা বিতর্ক, সাব্বিরের বাদ পড়াটা অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার অনুরোধে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে এনামুল ফিরলেও আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি। ৩ ম্যাচে ৩৩ রান করা এই তরুণ ওপেনারকে তাই এশিয়া কাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় সুযোগ দিতে রাজি নন নির্বাচকেরা।
আয়ারল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে ভালো খেলার পুরস্কার হিসেবে গত জানুয়ারির পর আবারও বাংলাদেশ দলে জায়গা পেয়েছেন মোহাম্মদ মিঠুন। এশিয়া কাপের দলে সুযোগ পেয়েছেন ৬টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলা আরিফুল হকও। বাদ পড়বেন কি পড়বেন না, এমন গুঞ্জন থাকার পরও এ-যাত্রা টিকে গেছেন কদিন আগে মামলার জটিলতায় পড়া মোসাদ্দেক হোসেন।

এশিয়া কাপের বাংলাদেশ দল:
মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান (সহ-অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, আরিফুল হক, মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেন, নাজমুল হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাজমুল ইসলাম, রুবেল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান ও আবু হায়দার

প্রেম ও মারপিটের রসায়ন

                      পবিত্র ঈদুল আজহার উৎসবে মুক্তি পেয়েছিল চারটি ছবি—ক্যাপ্টেন খান, মনে রেখো, জান্নাত ও বেপরোয়া। বরাবরের মতো এবারও আনন্দ থেকে ছবিগুলোর সমালোচনা ছাপানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজ ছাপা হলো
ক্যাপ্টেন খান ও মনে রেখোর সমালোচনা। আগামী সংখ্যায় বাকি দুটির সমালোচনা ছাপা হবে।
মনে রেখো
পরিচালক: ওয়াজেদ আলী, অভিনয়: মাহিয়া মাহি, বনি, মিশা সওদাগর, সাদেক বাচ্চু।
প্রযোজনা: হার্টবিট প্রোডাকশন

চলচ্চিত্র দেখতে হয় চোখ দিয়ে আর অনুধাবন করতে হয় শরীর-মন-অনুভূতি-বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞান দিয়ে। বেশির ভাগ দর্শকই চায় চলচ্চিত্রে একটি জমজমাট কাহিনি, নাচ-গান-কৌতুক বিনোদনপূর্ণ দৃশ্য-শব্দের ব্যঞ্জনায় দ্বন্দ্ব-সংঘাত-বিরহ শেষে মিলনের ঘনঘটায় চিত্তের সন্তুষ্টি। আর প্রযোজক-পরিচালক চান তাঁদের সৃষ্ট শিল্পপণ্যটি দর্শক-ভোক্তাদের দেখিয়ে, অর্থাৎ বিক্রি করে লগ্নিকৃত পুঁজি ফিরিয়ে তবে লাভবান হতে।

বর্তমানে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে চরম মন্দাবস্থা বিরাজ করছে নানা কারণে। এসব কারণের মধ্যে রয়েছে ব্যতিক্রমধর্মী আকর্ষণীয় গল্পের অভাব, সৃজনশীল নির্মাতার অভাব, প্রেক্ষাপটের অভাব, পুঁজির অভাব, আর্থসামাজিক-পারিপার্শ্বিক অস্থিরতা এবং সিনেমা হলের পরিবর্তে বিভিন্ন মাধ্যমে (টিভি চ্যানেল, ইন্টারনেট, ফেসবুক, মুঠোফোন, ইউটিউব, ডিভিডি, পেনড্রাইভ, টুইটার, ডিশ লাইন প্রভৃতি) ছবি দেখার সুযোগ। দর্শকেরা আর আগের মতো সিনেমা হলে গিয়ে ছবি দেখে না। ফলে ছবি নির্মাণ বাবদ লাখ লাখ, এমনকি কোটির বেশি লগ্নি অর্থ ফেরত আসছে না। এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে ২০১৮ সালের ঈদুল আজহা উপলক্ষে কয়েকটি মুক্তিপ্রাপ্ত ছবির মধ্যে হার্টবিট প্রযোজিত, ওয়াজেদ আলী সুমন পরিচালিত এবং বাংলাদেশ-ভারতের তারকা-কুশলীদের সমন্বয়ে নির্মিত মনে রেখো একটি।

‘সিনেমা বা চলচ্চিত্র’ আর আগের মতো নেই। নেই আগের মতো সেই ছবি এবং পরিচালনাও। তাই মনে রেখো দেখার সময় চলচ্চিত্রের সব ব্যাকরণ ভুলে যেতে হয়। পর্দায় ঘটনা যত এগোতে থাকে, ততই ভয়ংকর সব দৃশ্যের সমাবেশ ঘটতে থাকে। বাস্তবতা ও শিল্পবোধ, সামাজিক দায়বদ্ধতাও উধাও হতে থাকে। টেন্ডারবাজি, মাস্তানি, গুন্ডামি, জোরপূর্বক আটকে রাখা, প্রতিহিংসা, চিৎকৃত সংলাপ, হাইবিট মিউজিক, ব্যান্ড পার্টির তালে তালে মারপিট, কলেজে লেখাপড়ার নামে আড্ডাবাজি, জোরপূর্বক প্রেম নিবেদন, ক্লাসে মাস্তানি ইত্যাদি চলতেই থাকে। ছবির আখ্যানভাগে একদিকে রয়েছে ঠিকাদার আশরাফ চৌধুরীর (সাদেক বাচ্চু) ছেলে লাকী। আসলে লাকী তার মৃত ভাই আসাদ চৌধুরীর পুত্র। অন্যদিকে রয়েছে টেন্ডারবাজি মাস্তান সরদার হিপ্পু (মিশা সওদাগর) ও তার ছোট ভাই সোহেল। লাকী ও সোহেলের নজর পড়ে ধনীর কন্যা কলেজছাত্রী মুনমুনের (মাহি) ওপর। দুজনই তার প্রেম পেতে চায়। মূলত দেখা যায়, ‘প্রেম’ নিয়েই যত দ্বন্দ্ব-সংঘাত, মারপিট-হত্যাকাণ্ড ঘটে মনে রেখো ছবিতে।

মূলত মারপিটনির্ভর এ ধরনের ছবিতে বোধ হয় পরিচালকের কিছু করার থাকে না সমন্বয়ের ভূমিকা পালন করা ছাড়া। বিভাগীয় নির্দেশকেরা কাহিনি ও সংলাপ লেখেন, শিল্পীরা অভিনয় করেন, মারপিট করেন, নাচ-গান হয়, ক্যামেরাম্যান চিত্র ধারণ করেন, সংগীতকার-শব্দধারকেরা মিউজিক বা শব্দ পাঞ্চ করেন আর সম্পাদক তা জোড়া লাগান। কাজেই এ ধরনের আলোকচিত্রিত বা ‘ফটোগ্রাফ থিয়েটারের’ মধ্যে চলচ্চিত্রের ভাষার অন্বেষণ করা বৃথা।

আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, গল্প বা কাহিনি হচ্ছে একটি ছবির ‘প্রাণ’। কিন্তু মনে রেখোতে সেই প্রাণটিই নেই। এ ধরনের প্রেম ও মারপিট মাধ্যম কাহিনির সঙ্গে দর্শকেরা একাত্ম হতে পারে না। তারা তামিল, তেলেগু, হিন্দি ছবিতে এর চেয়ে ভালো উপাদানসমৃদ্ধ বিষয় দেখে থাকে নানা মাধ্যমে। কাজেই মনে রেখোর কাহিনি দর্শকের মনে দাগ কাটে না। এর দৃশ্যরূপ, শব্দ ও সংগীতের গ্রন্থনা, অভিনয়, মারপিট, সংলাপ অস্বাভাবিক, অবাস্তব ও অসহনীয়। ছবির শুরুতে যে মারপিটের শুরু হয়, শেষ দৃশ্য পর্যন্ত তা অক্ষুণ্ন² থাকে।

লেখক: চলচ্চিত্র লেখক ও গবেষক